প্রায় কেলেঙ্কারি...!

আজ পঁচিশে ডিসেম্বর, বিকেল/সন্ধেবেলা নাগাদ রবীন্দ্র-সদন এলাকায় পূজো প্যান্ডেলের মতো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। পুলিশ দড়ি দিয়ে ফুটপাথ ঘিরে দিয়েছে আর ভিড় সামলাচ্ছে।

আমি মেট্রো ধরবো বলে নন্দনের সামনে থেকে ফুটপাথ ধরে মেট্রো স্টেশনের দিকে এগোচ্ছি একটু একটু করে, ওই ভিড়ের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে। মাঝে মাঝে ঠেলাঠেলিও হচ্ছে পূজো প্যান্ডেলে প্রবেশের ভিড়ের লাইনে যেমন হয়।

ভিড়ের মধ্যে, আমার ঠিক সামনে তখন এক মহিলা যাচ্ছেন, ওনার পাশে ওনার স্বামী কোলে বাচ্চা নিয়ে এগোচ্ছেন।

আমার দুই হাত আমার শরীরের সাথে চ্যাপ্টা হয়ে দুই দিকে ঝুলছে - তোলার বা নড়ানোর মতো জায়গা নেই। নাড়াতে গেলেই আশেপাশের মানুষকে গুঁতোতে হবে। 

এইরকম একটা পরিস্থিতিতে, আমার পেছনের এক ভদ্রলোক তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে মারলো আমার ডান দিকে পেছন থেকে ধাক্কা। আর ঘটে গেলো মহা বিপর্যয়। আমার পাশের ঝুলন্ত গোবেচারা হাত, ওই আকস্মিক ধাক্কার ঠেলায় সোজা সামনের মহিলার পশ্চাৎদেশে গিয়ে লাগলো।

মহিলা চকিতে ফিরে তাকালেন।

ব্যাস, হয়ে গেলো, আমি ভাবলাম। আমার এতো বছরের নিষ্কলঙ্ক ট্র্যাক রেকর্ডে এইবার লাগতে যাচ্ছে "কালো দাগ"। আজ পর্যন্ত কোনো মহিলাকে এই ধরণের বিপর্যস্ত করে পাবলিক প্লেসে গালি খেতে হয়নি। আজ বউনী হয়ে যাবে।

মহিলা আমার দিকে দু-সেকেন্ড তাকিয়ে, কিছু না বলে, মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

আমি আটকে থাকা নিঃশ্বাস ছাড়লাম। (মনের মধ্যে অবশ্য প্রশ্ন আসতে ছাড়ল না: আমাকে কি এতটাই ভালোমানুষ দেখতে, নাকি চূড়ান্ত গোবেচারা ভীতু টাইপ লাগে দেখলে?)

পেছনের হতচ্ছাড়া ভদ্রলোক পুরো বেপারটা দেখলেন এবং বোধহয় বুঝলেনও যে ওনার তাড়াহুড়োর ফলে কি ঘটতে যাচ্ছিল - কারণ দেখলাম এর পর উনি একটু পিছিয়ে কিছুটা জায়গা ছেড়ে দিলেন। আমি হাঁফ ছেড়ে সামনে-পেছনে একটু ফাঁকা নিয়ে স্বস্তিতে হাটতে পারলাম এবার।

Comments

  1. গল্পটা যে মজার হয়ে রয়ে গেল, সেটা স্বস্তি দিল, রাজর্ষি। এই ধরণের পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়া ভীষণ সোজা। নিজে চোখে যেতে দেখেছি। নির্দোষ লোক অপমানিত হয়ে যায়। আপনার ট্র্যাক রেকর্ড জীবনভরের জন্য জ্বলজ্বলে থাকুক।

    ReplyDelete
    Replies
    1. কমেন্ট আজ খেয়াল করলাম। আসলে এত কম লিখি বলে নিয়মিত চেকই করা হয় না।

      হ্যাঁ, এরম সিচুয়েশন কোথা থেকে শুরু হয়ে কোথায় শেষ হয়, কিছুই বলা যায় না।

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

ডেটিং অ্যাপ - পরের গল্প

শীতলতার সন্ধানে

ডেটিং অ্যাপ - প্রথম দিন