Posts

'অবান্তর' ব্লগে আমার লেখা কিছু কমেন্ট

নিজের লেখা যেহেতু এতই কম, তাই অগত্যা যেখানে যা লিখেছি কুরিয়াবাড়িয়ে রাখার প্রবণতা জাগে। লেখিকা (আমার শুধু এই পরিচয়টুকুই জানা) কুন্তলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবান্তর ব্লগ অনেকদিন ধরে পড়ছি, ভালো লাগে ওনার লেখা। ওনার ব্লগটা বেশ যেন এক ধারাবাহিক উপন্যাস, আর উনি সেই উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র।  ওনার ব্লগের কিছু কমেন্টে আমার কিছু ভালো বা ইন্টারেষ্টিং উত্তর আছে, যেগুলো পরেও পড়ে  দেখতে ইচ্ছে হয়েছিল আমার।  সেরকম কিছু পোস্টের লিংক এখানে জড়ো করে রাখি: অক্টোপাসের স্বপ্ন   The Philosophy of Reading   সময়ের ফের  (এটাতে একটা ছোট্ট কবিতাই লিখে ফেলেছি!) আর ওনার যে পোস্টটা প্রথম পড়েছিলাম এবং পড়েই দারুন ভালো লেগেছিলো, এবং যার ফলে ওনার আরো লেখা পড়া শুরু করি:  Mokkhom proshno  

ডেটিং অ্যাপ - পরের গল্প

ডেটিং অ্যাপের প্রথম আর দ্বিতীয় দিনের গল্প আগেই লিখেছি। দ্বিতীয় দিনেই একজনের সঙ্গে কথা শুরু হয়েছিল। তার পরেও অনেকের সাথেই কথা হয়েছিল। সেইসব আলাপের কিছু টুকরো এখানে লিখে রাখি। কিছু মজার, কিছু নট সো মজার।  প্রথম এনকাউন্টার (যেটার উল্লেখ এখানে করেছিলাম) থেকে: অ্যাপের মধ্যে চ্যাট চলছে, কিছু কথা আদানপ্রদান হয়েছে। জেনেছি যে উনি এই মুহূর্তে বাড়িতেই পরে গিয়ে হালকা ফ্র্যাকচার মতো করে, পায়ে ব্যাণ্ডেজ নিয়ে ঘুরছেন। যেদিনের কথা লিখছি, সেদিন ফ্র্যাকচারের এক মাস মতো পার হয়েছিল, আর উনি সেদিন আবার এক্স-রে করে ডাক্তারের কাছে গেছিলেন। সেদিন কথা চলছে, তার মধ্যে হটাৎ দেখলাম ছবি পাঠিয়েছেন, ছবি লোড হবার সময় যে গোল গোল চিহ্ন ঘোরে, সেরম দুটো ঘুরছে। বাহ - নিজের কিছু ছবি পাঠাচ্ছেন হয়তো - দেখার জন্যে ভারী উৎসুক হয়ে পড়লাম। গোল গোল ঘোরা থামলো। থাম্বনেইল দেখালো। প্রথমে এক-দু সেকেন্ড বুঝতেই পারলাম না - এটা কি - সাদা কালো মতো! তারপর বুঝলাম - এক্স-রের ছবি! হায় হায়, শেষে কঙ্কাল পাঠালেন! উনি বললেন, একটা এক মাস আগের, আর একটা এখনের। ভাবছি কি বলতে হয় - "ভারী সুন্দর" বলা ঠিক হবে কিনা - এমন সময় প্রশ্ন চলে এলো, আর তা

ডেটিং অ্যাপ - দ্বিতীয় দিন

[প্রথম দিনের গল্প এখানে ] দ্বিতীয় দিন: অফিস আছে। গতকাল ডেটিং অ্যাপ ধোঁকা দেবার পর দমে গেছি একটু, এক্সপেকটেশন কমে গেছে। তাও সকালে একবার দেখে নিয়ে, অফিসের জন্যে রেডি হয়ে, বেরিয়ে পড়লাম।  অফিস চলার মধ্যে এক দুবার দেখলাম। অফিসে আবার অ্যাপটা ওপেন করা বিপদজনক। অ্যাপ-এর ডিফল্ট ল্যান্ডিং স্ক্রিন হচ্ছে যেখানে নতুন প্রোফাইল দেখায়। ফলত, অ্যাপ খুলতেই যদি স্ক্রিন জুড়ে কোনো ভদ্রমহিলার স্বল্পবাস পরা  বা ওরম কিছু ধরণের ছবি চলে আসে, আর সেটা কোনো কলিগ দেখে ফেলে, তাহলে পুরো মাসের মজার খোরাক যোগান দেওয়া হয়ে যাবে তাদের কাছে। তাই সিগারেট খেতে বেরোনোর সময় শুধু চেক করছিলাম। যাই হোক, অ্যাপ নিজের নমকহারামী বজায় রেখেছে, মরুভূমির মতো খাঁ খাঁ করছে চারদিক, কোথাও কিস্সু  নেই। বাড়ি ফেরার আগের তিন চার ঘন্টা আর দেখিনি, ততক্ষনে আশাভরসা সব গেছে।  বাড়ি ফিরে, চান খাওয়াদাওয়া করে (কোরোনার সময় যে বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে সবসময় স্নান করতাম, সেই অভ্যেসটা রেখে দিয়েছি), সিনেমা চালিয়ে বসলাম। এগারোটার একটু পর মনে হলো যেন টুং করে একটা আওয়াজ হলো ফোনে। প্রথমে পাত্তা দিইনি, কিন্তু  তারপর মনে হলো দেখেই নি। ফোনের স্ক্রিন অন করেই - ওরেব্বাস -

ডেটিং অ্যাপ - প্রথম দিন

আজকাল কুচকাওয়াজ করছি। লেফট রাইট। নাহ, মাঠে বা রাস্তায় নয়, চেয়ারে বসে, মোবাইল হাতে নিয়ে, ডেটিং অ্যাপে স্বোয়াইপ লেফট আর স্বোয়াইপ রাইট। শুরুটা বলি।  পয়লা জানুয়ারী দিনটা পুরো ফাঁকা ছিল, প্ল্যানড কিছু নেই। সকালে উঠে হটাৎ মনে হল, "ধূসস, অনেক হয়েছে, আজ আমি নতুন মানুষদের সাথে আলাপ করে ডেট-এ যাবো"। সোজা খুলে ফেললাম ডেটিং অ্যাপে একাউন্ট। যা করছি ভালো ভাবেই করবো - আমার এক্ষুনি ডেট চাই - তাই পয়সা দিয়ে প্রিমিয়াম মেম্বার হয়ে গেলাম। কোনোক্রমে হাতের কাছে যা ফটো ছিল খুঁজে, একাউন্ট রেডি করে ফেললাম সুপারফাস্ট। অ্যাপে সাজেস্ট করলো 'spotlight' ফীচার ইউস করতে - তাতে নাকি আমাকে সবার আগে দেখাবে। ঠিকই তো, দেখানোই উচিত আমাকে সবার আগে। করে দিলাম স্পটলাইট অন।  তারপর অধীর আগ্রহে শুরু করলাম লেফট রাইট স্বোয়াইপ। জীবনে মানুষকে এরকম তুড়ি মেরে রিজেক্ট বা একসেপ্ট করার সুযোগ কখনো পাইনি, পাবোও না আর। একদম আলফা ওমেগা সুপারম্যান গড লাগতে লাগলো নিজেকে। ছবির অ্যাঙ্গেলটা ভালো লাগলো না - আস্ত মানুষটা রিজেক্টেড। জামার রংটা ভালো না - রিজেক্টেড। প্রথম ছবিতে চোখ দেখা যাচ্ছে না কেন? রিজেক্টেড ।পাঙ্কচ্যুয়েশনের পর,পরে

দেখি যে তোমায়, শুনি যে তোমায়

দেখি যে তোমায়, শুনি যে তোমায়, দিবা নিশি কোটি বার  জানি না কে তুমি, আছো কোন পাড়ে, কত দিগন্ত পার।  সত্যি অলীক জানি না যে আমি, বুঝি না প্রখর বিচার, শুধু তুমি আছো, এই মায়া-আশায়, করি সহস্র ক্রোশ পার।  হঠাৎ যদি সামনে আসো  চেনা কি হবে তোমায়  নাকি জীবন কুয়াশা মাঝে  থেকে যাবে অজানায়  তোমারি সুরেতে বেঁধেছি তান খুঁজেছি শুধুই তোমারি গান  তোমারি ছোঁয়ায় মেতেছে প্রাণ  কে তুমি, মায়াবিনী, কোন অলীক বিস্ময় ! বহু বছরের অনেক চেষ্টার পর কবিতার মতো কিছু একটা লিখতে পেরেছিলাম দু-তিন বছর আগে। আজ মনে হল, সেটা ব্লগে দিয়ে রাখি। পাঙ্কচ্যুয়েশন এখনো পুরো ঠিক করা হয়নি।  

প্রায় কেলেঙ্কারি...!

আজ পঁচিশে ডিসেম্বর, বিকেল/সন্ধেবেলা নাগাদ রবীন্দ্র-সদন এলাকায় পূজো প্যান্ডেলের মতো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। পুলিশ দড়ি দিয়ে ফুটপাথ ঘিরে দিয়েছে আর ভিড় সামলাচ্ছে। আমি মেট্রো ধরবো বলে নন্দনের সামনে থেকে ফুটপাথ ধরে মেট্রো স্টেশনের দিকে এগোচ্ছি একটু একটু করে, ওই ভিড়ের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে। মাঝে মাঝে ঠেলাঠেলিও হচ্ছে পূজো প্যান্ডেলে প্রবেশের ভিড়ের লাইনে যেমন হয়। ভিড়ের মধ্যে, আমার ঠিক সামনে তখন এক মহিলা যাচ্ছেন, ওনার পাশে ওনার স্বামী কোলে বাচ্চা নিয়ে এগোচ্ছেন। আমার দুই হাত আমার শরীরের সাথে চ্যাপ্টা হয়ে দুই দিকে ঝুলছে - তোলার বা নড়ানোর মতো জায়গা নেই। নাড়াতে গেলেই আশেপাশের মানুষকে গুঁতোতে হবে।  এইরকম একটা পরিস্থিতিতে, আমার পেছনের এক ভদ্রলোক তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে মারলো আমার ডান দিকে পেছন থেকে ধাক্কা। আর ঘটে গেলো মহা বিপর্যয়। আমার পাশের ঝুলন্ত গোবেচারা হাত, ওই আকস্মিক ধাক্কার ঠেলায় সোজা সামনের মহিলার পশ্চাৎদেশে গিয়ে লাগলো। মহিলা চকিতে ফিরে তাকালেন। ব্যাস, হয়ে গেলো, আমি ভাবলাম। আমার এতো বছরের নিষ্কলঙ্ক ট্র্যাক রেকর্ডে এইবার লাগতে যাচ্ছে "কালো দাগ"। আজ পর্যন্ত কোনো মহিলাকে এই ধরণের বিপর্যস্ত করে প

আরেকটা জন্মের আবেদন

[ সূচনা / প্রথম অধ্যায় এখানে ] লাইফে অনেক প্রব্লেম। তনিমা হটাৎ বলে বসলো, এটাই নাকি ওর শেষ জীবন। তাহলে সামনের জন্মের দেখাটা কিকরে হবে! সামনের জন্মে ফুলু কিকরে করবো আমরা? (এখানে বলে রাখি, "ফুলু" শব্দটা ইংরিজি "flirtation/romance" জাতীয় জিনিস এর সাথে "ফুল দেওয়া নেওয়া" ইঙ্গিতজনক একটা ভাবের সমষ্টি।) যাই হোক, প্রব্লেমের বিহিত চাই। কি আর করব, ঠিক করলাম যে যেতে হবে ব্রহ্মার কাছে, তনিমার জন্যে আরেকটা জীবনের এক্সটেনশনের আবেদন করতে। মহা উৎসাহে গেলাম চলে।   দরজার ওপর নেমপ্লেটে লেখা "ব্রহ্মা, সিনিয়র গড"। বিশাল দরজা। টোকা মারলাম। শব্দই শোনা গেলো না। যাবে কি করে, আমার মানুষ্য আঙুলের টোকা ওই ১০ ইঞ্চি লোহার দরজা ভেদ করে যাওয়া অসম্ভব। সাহস করে প্রাণপণে দরজা ঠেলে উঁকি মারলাম ভেতরে। দেখি, এক দাড়িওয়ালা বুড়ো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নানান অঙ্গভঙ্গিতে "ম্যায় সময় হুউউ... !!" বলে চলেছে। তবে কি ভুল জায়গায় এলাম? আবার নেমপ্লেটটা চেক করলাম - না, ঠিকই আছে। বুড়ো বয়েসের ভীমরতি ওটা। মহাভারত সিরিয়ালটা মাথায় চড়ে গেছে! ভেতরে ঢুকে গলা খাঁকড়ি দিলাম। বুড়ো হচকিয়ে থেমে গিয়ে স্বর্গ